মহাকাশে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে ময়মনসিংহে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম এরোস্পেস ও ডিফেন্স রিসার্চ কোম্পানি ‘ধুমকেতু এক্স’। রকেট, স্যাটেলাইট ও ড্রোন প্রযুক্তিতে উদ্ভাবনের মাধ্যমে এরোস্পেস খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে কাজ করছে তরুণদের এ দল। ইতোমধ্যে দেশের প্রথম রকেট উক্ষেপণের কাজও করেছে তারা।
২০২২ সালে ‘Rocketry Innovation Challenge-2022’ বিজয়ী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এটুআই প্রকল্পের অধীনে মহাকাশে রকেট পাঠানোর উদ্যোগ নেয় ধুমকেতু এক্স। তবে আইনি জটিলতার কারণে সে রকেট উৎক্ষেপণের অনুমতি মেলেনি।এবার ধুমকেতু এক্সের জন্য সুসংবাদ এসেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম নীতিনির্ধারণী ফোরাম The International Institute for Strategic Studies (IISS) আয়োজিত ‘Space Situational Awareness & Responsible Space Behaviour’ কর্মশালায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে ধুমকেতু এক্স। এতে অংশ নিচ্ছেন ধুমকেতু এক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী নাহিয়ান আল রহমান এবং হেড অব ম্যানেজমেন্ট হানজালা রহমান মুন্না।ধুমকেতু এক্সের প্রধান নির্বাহী নাহিয়ান আল রহমান বলেন, ‘এই আমন্ত্রণ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের এরোস্পেস খাতের জন্য একটি বড় অর্জন। আমাদের টিম আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। NASA এবং SpaceX-এর শীর্ষ রকেট বিজ্ঞানীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার দারুণ সুযোগ পাবো। পাশাপাশি মহাকাশে বাংলাদেশের রকেট পাঠানোর পথ সুগম হবে।’
ধুমকেতু এক্স ইতোমধ্যে একাধিক রকেট ও স্যাটেলাইট প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে:
রকেট একুশে: মেসোস্ফিয়ার স্তরে বিভিন্ন আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য তৈরি এ রকেটটির ধারণক্ষমতা ৫ কেজি।
রকেট বিদ্রোহী: ১৫০ কিমি উচ্চতায় কারমান লাইনে পৌঁছানোর ক্ষমতা সম্পন্ন এই রকেটটি বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক রকেট হতে যাচ্ছে। এটি বাণিজ্যিক পেলোড বহনের পাশাপাশি রিয়েল-টাইম আবহাওয়ার তথ্য সরবরাহ করবে।
স্যাটেলাইট বাংলা ০১: ২০২৫ সালের মধ্যে উৎক্ষেপণের লক্ষ্যে তৈরি কিউব স্যাটেলাইট। এটি জলবায়ু পর্যবেক্ষণ, কৃষি গবেষণা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বৈজ্ঞানিক ডেটা সংগ্রহ করবে।
বিজয় মাইক্রো স্যাটেলাইট: ৫১০ কেজি ওজনের এই মাইক্রো স্যাটেলাইট নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা, কৃষি গবেষণা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য ডেটা সংগ্রহ করবে। এটি ২০২৭ সালের মধ্যে মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ধুমকেতু এক্সের প্রধান নির্বাহী নাহিয়ান আল রহমান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য অত্যাধুনিক ডিজাইন ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে এরোস্পেস খাতে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়া।’
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন